সবুজ প্রযুক্তি

সবুজ প্রযুক্তি

জলবায়ু পরিবর্তন প্রযুক্তি  / সবুজ প্রযুক্তি : 

জলবায়ু পরিবর্তন নিষ্পত্তি তে দুইটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপঃ 

  • জলবায়ু প্রশমন বা Climate Mitigation এবং
  • জলবায়ু সমন্বয়/ অভিযোজন বা Climate Adaptation 

বর্তমান সময় এ জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের চাহিদা, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন সবকিছু মাথায় রেখে উদ্ভাবন করা হচ্ছে জলবায়ু প্রযুক্তি । জলবায়ু প্রযুক্তি মূলত জলবায়ু প্রশমন ও জলবায়ু সমন্বয় এর একটি অংশ । Net Zero Goal এ পৌঁছানোর পথ হচ্ছে জলবায়ু প্রযুক্তি ।  

World Economic Forum অনুযায়ী জলবায়ু প্রযুক্তি এর বিকাশে অন্যতম প্রভাব রাখে বা রাখতে পারেঃ

  • uncheckedকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
  • uncheckedপৃথিবী পর্যবেক্ষণ
  • uncheckedড্রোন
  • uncheckedউন্নত কম্পিউটিং
  • uncheckedঅগমেন্টেড রিয়েলিটি
  • uncheckedইন্টারনেট অফ থিংস

জলবায়ু পরিবর্তন এর ফলে আমরা যে অনিশ্চিত জীবন যাপন করছি ,যেখানে যেকোনো সময় দুর্যোগ এর সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এমন পরিস্থিতে পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও ড্রোন প্রযুক্তি ব্যাবহার এর মাধ্যমে আমরা আসন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে আগে অবগত হতে পারবো এবং সে অনুযায়ী পূর্ব প্রস্তুতি নিতে সক্ষম হব । এই প্রক্রিয়া জলবায়ু সমন্বয়/ অভিযোজন এ অবদান রাখে । কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের সঠিক ও সুনির্দিষ্ট আবহাওয়া ও জলবায়ু জড়িত নকশা তৈরি করে সাহায্য করে যা আমাদের কার্বন নিঃসরণ থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম প্রণয়ন করতে সাহায্য করে । সমুদ্র পৃষ্ঠের ধারণা দিয়ে আমাদের সমুদ্র থেকে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে এগিয়ে নিয়ে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা । 

ড্রোন দুর্যোগ প্রবণ বা দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকার জলবায়ু ঝুঁকি ও প্রভাব সম্পর্কে চাক্ষুষ তথ্য এনে দিয়ে আমাদের সতর্ক করে । দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকা যেখানে মানুষ এর পক্ষে যাওয়া সম্ভব না সেখানে খোজ এবং উদ্ধার (Search and Rescue) মিশন প্রণয়ন করে । পূর্বোক্ত প্রযুক্তি গুলো জলবায়ু সমন্বয়/ অভিযোজন বা Climate Adaptation  এ সাহায্য করে । 

নিচে আরও কিছু প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করা হল যেগুলো জলবায়ু প্রশমন বা Climate Mitigation এ ভুমিকা রাখতে পারেঃ 

  • uncheckedনবায়নযোগ্য শক্তি 
  • uncheckedদক্ষ শক্তির যন্ত্র 
  • uncheckedকার্বন সঞ্চয় ও সংরক্ষণ 
  • uncheckedটেকসই যাতায়াত 
  • uncheckedসবুজ কৃষি 
  • uncheckedবৃত্তাকার অর্থনীতি 

জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যাবহার এর ফলে কার্বন নিঃসরণ কমবে, খরচ কম হবে, যন্ত্রের দক্ষতা বাড়বে । নবায়নযোগ্য শক্তির মধ্যে পড়ে সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি, বায়োগ্যাস, জলবিদ্যুৎ। 

দক্ষ শক্তির যন্ত্র গুলোর মধ্যে রয়েছে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, ফ্লো ব্যাটারি, হাইড্রোজেন ভিত্তিক সঞ্চয় ব্যাটারি যারা কার্বন নিঃসরণ কম রেখে ডাটা এনালাইসিস এর মাধ্যমে স্মার্ট গ্রিড টেকনোলজি বিদ্যুৎ দক্ষ উপায়ে বিস্তার করে। Demand Side Management পন্থা অবলম্বন এর মাধ্যমে ভোক্তারা তাদের বিদ্যুৎ শক্তির ব্যাবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং গ্রিড এ বিদ্যুৎ ব্যাবস্থার/পরিচালনার চাপ কমাতে পারে। এছাড়াও এলইডি বাল্ব ব্যাবহার এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ অপচয় ও খরচ কমে। এতে ৫০-৮০% বিদ্যুৎ খরচ কমে ৩০ ওয়াট খরচ হয়। এছাড়া ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি যাতায়াত ব্যাবস্থা কে টেকসই করছে। সবুজ কৃষি তে অবদান রাখছে আগ্রিভল্যাটিক্স , খরা প্রতিরোধী শস্য এবং জলবায়ু অভিযোজ্য শস্য যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। বৃত্তাকার অর্থনীতিতে বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার উন্নয়ন, আপ সাইক্লিং এবং পুনর্ব্যবহার আমাদের কাঁচামাল এর সদব্যাবহার নিশ্চিত করবে। 

কার্বন সঞ্চয় ও সংরক্ষণ তিনটি ধাপ এ সম্পন্ন হয়ঃ

১। গ্রহনঃ এই ধাপ এ বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট , জীবাশ্ম জ্বালানি উৎস, কল কারখানা থেকে নিঃসরিত কার্বন দহন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কার্বন, অক্সি ফুয়েল কার্বন সংংরক্ষণ করে

২। সঞ্চালনঃ পরবর্তীতে বিভিন্ন পাইপ এর মধ্যে দিয়ে তা সংরক্ষণগারে পৌছায়ে যেগুলো ভূতাত্ত্বিক  তেল এবং গ্যাস এর আধার

৩। সংরক্ষনঃ ভূতাত্ত্বিক গঠন আগারে শিলা বাধার কারনে কার্বন আটকে থাকে। 

বর্তমানে আরও গভীর এবং সুনির্দিষ্ট গবেষণা ও উন্নয়ন এর মাধ্যমে আমরা জলবায়ু প্রজুক্তি কে জলবায়ু পরিবর্তন এর বিরুদ্ধে একটা উপযুক্ত হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। 

Writer: Jawata Afnan

শেয়ার করুন..
0 0 votes
Article Rating
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments